নির্বাচনে কী কী পরিবর্তন দরকারঃ বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য বেশ কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। এ ধরনের পরিবর্তন গণতন্ত্রের উন্নয়ন ও ভোটারদের আস্থা ফেরাতে সহায়ক হতে পারে ।
১. নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি
- স্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি): নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা জরুরি, যেন এটি কোনো রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করতে পারে। ইসির সদস্য নিয়োগে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া থাকা দরকার, যাতে তারা সরকারের বাইরে থেকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
- কারিগরি ও প্রশাসনিক সক্ষমতা বৃদ্ধি: ইসিকে যথাযথ প্রযুক্তি ও প্রশাসনিক সহায়তা দিয়ে শক্তিশালী করতে হবে, যাতে নির্বাচনে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
২. ডিজিটাল এবং প্রযুক্তিগত স্বচ্ছতা
- ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারে স্বচ্ছতা: ইভিএম ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। ইভিএম ব্যবহারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জন করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করতে হবে।
- ভোটার যাচাই ও রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া উন্নত করা: ভুয়া ভোটার বা ভোটার তালিকায় অসামঞ্জস্য রোধ করতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত, যেমন বায়োমেট্রিক ডেটার মাধ্যমে যাচাই।
৩. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা
- বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সক্রিয় ভূমিকা: নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে কোনো ধরনের বিরোধ দেখা দিলে বিচার বিভাগের নিরপেক্ষ ও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া এবং নির্বাচন সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুনঃ
- বাংলাদেশি গারো উপজাতিদের জীবন – bangladesh tribal life
- বাংলাদেশ ২৩৩ রানে অলআউট – মুমিনুলের সেঞ্চুরিতে লড়াই
- চট্টগ্রাম বন্দরের অগ্নিকাণ্ড – নিয়ন্ত্রণে বন্দর ও কোস্টগার্ড
- যেসব ব্যাংকে টাকা রাখলে আপনার টাকা গায়েব হয়ে যেতে পারে
- বাংলাদেশ গরীব রাষ্ট্র নয় বিভিন্ন দেশে মিলছে সম্পদের খোঁজ
৪. ভোটারদের নিরাপত্তা ও ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ
- নির্বাচনী সহিংসতা রোধ: নির্বাচনের সময় সহিংসতা ও ভয়ভীতি বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে, যাতে ভোটাররা বিনা বাধায় তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।
- প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত: প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভোটাধিকার ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে, যেন তারা নিরাপদে এবং উৎসাহের সাথে ভোট দিতে পারেন।
৫. অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা
- সবার অংশগ্রহণের সুযোগ: সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে একটি সমতাভিত্তিক পরিবেশ তৈরি করা উচিত। কোনো দল বা প্রার্থীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে বিরোধিতা করা বা হয়রানি করা উচিত নয়।
- রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজন: নির্বাচনের আগে সব দলের সাথে আলোচনা করে একটি জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা উচিত। নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে।
৬. প্রচারণার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ ও সমতা
- নির্বাচনী প্রচারণার সমতা: প্রচারণার ক্ষেত্রে সব প্রার্থীকে সমান সুযোগ দিতে হবে। বিশেষত সরকারে থাকা দলকে সরকারি সুবিধা ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে, যাতে নির্বাচনী প্রচারণা অবাধ ও সুষ্ঠু হয়।
এই পরিবর্তনগুলো আনার মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব, যা জনগণের আস্থা অর্জন করতে সহায়ক হবে ।