বাংলাদেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় সাম্প্রতিক সময়ে নতুন কিছু পরিবর্তনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, আগামী বছর থেকে মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। প্রাথমিক স্তরের বইগুলোর ক্ষেত্রে পরিবর্তন তুলনামূলকভাবে কম হবে।
পরীক্ষা ও মূল্যায়ন ব্যবস্থা:
- ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা তিন ঘণ্টার হবে, যার ৭০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে, এবং বাকি ৩০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে বিদ্যালয়ে শিখনকালীন কার্যক্রমের উপর ভিত্তি করে।
শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন:
- প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে তেমন কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না, তবে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যবইগুলোতে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে।
- ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির সব বইয়ে প্রায় আমূল পরিবর্তন আনা হবে। নতুন শিক্ষাক্রমের বই সরিয়ে ২০১২ সালের পুরোনো শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে বই দেওয়া হবে।
নতুন কিছু সংযোজন:
- মাধ্যমিকে হুমায়ূন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক উপন্যাস “১৯৭১” যুক্ত করার আলোচনা চলছে।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য:
- নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আগামী জানুয়ারিতে দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞানের, মানবিকের, অথবা ব্যবসায় শিক্ষার শাখা নির্ধারণ করবে। তাদের জন্য ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের আলোকে পরিমার্জিত পাঠ্যবই সরবরাহ করা হবে এবং সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি তৈরি করা হচ্ছে যাতে তারা এক শিক্ষাবর্ষের মধ্যে তা শেষ করতে পারে।
এই পরিবর্তনগুলির উদ্দেশ্য হল একটি বাস্তবায়নযোগ্য শিক্ষাক্রম নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার্থীদের শিখন প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করা।
আরও জানুন :
- বাংলাদেশি গারো উপজাতিদের জীবন – bangladesh tribal life
- বাংলাদেশ ২৩৩ রানে অলআউট – মুমিনুলের সেঞ্চুরিতে লড়াই
- চট্টগ্রাম বন্দরের অগ্নিকাণ্ড – নিয়ন্ত্রণে বন্দর ও কোস্টগার্ড
- যেসব ব্যাংকে টাকা রাখলে আপনার টাকা গায়েব হয়ে যেতে পারে
- বাংলাদেশ গরীব রাষ্ট্র নয় বিভিন্ন দেশে মিলছে সম্পদের খোঁজ
নতুন বই কবে আসবে?
নতুন বই আগামী বছর (২০২৫) থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আসবে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির নতুন বইগুলোর জন্য এনসিটিবি ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে, এবং এই বইগুলো পুরোনো শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে তৈরি করা হবে।
প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির বইয়ে তেমন কোনো পরিবর্তন হবে না, তাই এই বইগুলো আগের মতোই থাকবে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বইগুলোতে কিছু প্রয়োজনীয় সংশোধন করে মুদ্রণ করা হবে।
এনসিটিবি শিগগিরই এই নতুন বই এবং শিক্ষাক্রমের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করবে।
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার নিয়মে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন পরীক্ষার নিয়মগুলো হলো:
- পরীক্ষার সময়সীমা: ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির প্রতিটি বিষয়ের বার্ষিক পরীক্ষা হবে ৩ ঘণ্টার।
- মূল্যায়ন পদ্ধতি:
- ৭০ শতাংশ লিখিত পরীক্ষা: মোট মূল্যায়নের ৭০ শতাংশ হবে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে। এই অংশে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে।
- ৩০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন: বাকি ৩০ শতাংশ মূল্যায়ন করা হবে বিদ্যালয়ে শিখনকালীন কার্যক্রমের উপর ভিত্তি করে। এটি ক্লাস পারফরম্যান্স, উপস্থিতি, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রজেক্ট ও অন্যান্য কার্যক্রমের উপর নির্ভর করবে।
- সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি: বিশেষ করে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য, যাদের আগামী বছর (২০২৫) দশম শ্রেণিতে উঠতে হবে, তাদের জন্য সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হচ্ছে। এ কারণে তাদের পাঠ্যবইগুলোও সংক্ষিপ্ত করা হবে, যাতে তারা এক শিক্ষাবর্ষের মধ্যেই তা শেষ করতে পারে।
এই নতুন পরীক্ষার নিয়ম শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন এবং শিখন প্রক্রিয়ার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তৈরি করা হয়েছে।